একটি কোম্পানি যেখানে গার্মেন্টস কর্মীদের চেয়েও কম বেতনে (১০-১২ হাজার টাকা) দক্ষ কর্মী নিয়োগ করা হয়। ইন্টারভিউতে বলা হয়, “আপনি যেহেতু এখনও বিশেষজ্ঞ নন, ইন্টার্ন হিসেবে যোগ দিন।” এরপর ১০-১২ হাজার টাকা বেতন দেওয়া হয়, যদিও কাজের চাপ অনেক বেশি।
প্রবেশন পিরিয়ডের নিষ্ঠুর বাস্তবতা
প্রবেশন পিরিয়ড ৩ মাস, যেখানে কর্মীদের কাছ থেকে সেরা পারফরম্যান্স আশা করা হয়। যদিও পারফরম্যান্স ভালো হলেও বেতন বাড়ে না। শুধুমাত্র যারা লিডারদের ‘ওয়েলিং’ বা খুশি করতে পারে, তাদের বেতন সামান্য বাড়তে পারে।
প্রলোভন ও প্রতারণা
বেতন কাঠামোতে দেখানো হয় ১৮-৪৫ হাজার টাকা, কিন্তু বাস্তবে দেওয়া হয় ১২-১৮ হাজার। অভিজ্ঞতা যতই থাকুক, ৪৫ হাজার কেউ পায় না। টিম লিডারদের বেতনই ৩০ হাজারে পৌঁছায় না, অথচ জুনিয়রদের জন্য ৪৫ হাজারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।
চাপের চক্র
প্রতিদিন শুধু প্রজেক্ট ডেলিভারির চাপ দেয়া হয়। অফিস সময় ৯-৬ হলেও, ৬টা ২০ মিনিটে বের হলে মনে হয় বড় অপরাধ হয়েছে। তারা চায় যেন ২৪ ঘণ্টাই তাদের জন্য দাসত্ব করি।
অবাস্তব টার্গেটের ফাঁদ
প্রতিমাসে প্রজেক্ট ডেলিভারির চাপ বাড়ানো হয়। টার্গেট গুলো এমনভাবে নির্ধারণ করা হয়, যা পূরণ করা প্রায় অসম্ভব। কিন্তু বেতন কখনোই বাড়ে না। KPI বোনাসের কথা বলা হলেও, তা নিতান্তই কম বা আদৌ দেওয়া হয় না।
কাজের চাপ বনাম বেতন
কাজের চাপ এত বেশি যে প্রায় ৩০ দিনই কাজ করতে হয়। KPI বোনাসের লোভ দেখিয়ে কাজের চাপ আরও বাড়ানো হয়, কিন্তু ব্যাকএন্ড ডেভেলপাররা প্রায় কোনো KPI বোনাস পায় না বা খুব সামান্য পায়।
ছুটির সীমাবদ্ধতা
অন্যান্য অফিসে ঈদের ছুটি ১০ দিন হলেও, এখানে মাত্র ৪ দিন। পরের ঈদেও ৩-৪ দিনের বেশি ছুটি পাওয়া যাবে না।
ক্লায়েন্টের টিপসের অমানবিক ব্যবহার
ক্লায়েন্ট খুশি হয়ে কোনো কর্মীকে টিপস দিলেও, পুরো টাকা কোম্পানি নিজে রেখে দেয়। সেই কর্মী একটি টাকাও পায় না।
চাপের সংস্কৃতি
টিম লিডাররা তাদের বোনাস নিশ্চিত করতে কর্মীদের ওপর অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করে। ছুটি চাওয়া মানে যেন কিডনি চাওয়া।
—
মনিটরিং এবং মানসিক চাপ
সারাদিন সিসিটিভি মনিটরিং চলে। আপনার খারাপ লাগছে, একটু মাথা নিচু করলেন—তাতেও স্ক্রিনশট চলে আসবে।
—
পা চাটা কর্মী ও পক্ষপাত
কিছু কর্মী আছেন যারা পা চাটা সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত। তারা নেতৃত্বের খুশি রাখতেই অন্যদের নিচু করে রাখেন। কেউ ভালো বেতন চাইলে তারা বলে, “এত এক্সপেক্টেশন কেন?” তাদের কাছে এই বেতনই অনেক মনে হলেও, মার্কেট স্ট্যান্ডার্ডে এটি অত্যন্ত তুচ্ছ।
—
ফ্রিল্যান্সিং নিষেধাজ্ঞা
এই অফিসে থেকে আউটসোর্সিং বা ফ্রিল্যান্সিং করা নিষিদ্ধ। এখানে যা বেতন দেওয়া হয়, তাতে আলাদা কিছু না করলে পরিবারের খরচ চালানো অসম্ভব
সারসংক্ষেপে
এটি একটি অফিস যেখানে শুধুই চাপ, পক্ষপাত, অবাস্তব টার্গেট, নিম্ন বেতন, প্রতারণা এবং ব্যক্তিগত জীবনের কোনো অস্তিত্ব নেই। তবে অন্তত চা-কফি আর স্ন্যাকসে কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যায়।